Site icon নারায়ণগঞ্জ জিলাইভ | truth alone triumphs

নারায়ণগঞ্জ জেলার ব্যবসা

নারায়ণগঞ্জ জেলার ব্যবসা

আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় নারায়ণগঞ্জ জেলার ব্যবসা, ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী জেলার জনসংখ্যা হলো ৩০,৭৪,০৭৭ জন। ২০১১ সালের আদমশুমারী ও গৃহগণনা অনুসারে নারায়ণগঞ্জ জেলার জনসংখ্যা ছিল ২৯৪৮২১৭ জন (জাতীয় জনসংখ্যার ২.০৫%, যা মঙ্গোলিয়ার মত একটি বৃহৎ রাষ্ট্রের জনসংখ্যার সমান বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের মোট জনংখ্যার সমান। জেলায় পুরুষ জনসংখ্যা ১৫২১৪৩৮ জন এবং নারী জনসংখ্যা ১৪৬৭৭৯ জন।

নারী ও পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত ১০৭:১০০, যা জাতীয় অনুপাতের চেয়ে অনেক বেশি। ২০০১-২০১১ এর দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩.৫%। জেলায় জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৩০৮ জন বা প্রতি বর্গমাইলে ১১১৫৭ জন মানুষ বসবাস করে। গৃহহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৬৬৮ জন। ২০১৫ সালের জেলা পরিসংখ্যান তথ্য অনুযায়ী এ জেলায় স্বাক্ষরতার হার ৫৭.১০%, নারী স্বাক্ষরতার হার ৫৯.৪৮% এবং পুরুষ স্বাক্ষরতার হার ৫৪.৫৬%, যা জাতীয় স্বাক্ষরতার হার ৬৬.৪% এর চেয়ে কম। জেলায় ৬৭৫৬৫২ টি খানা বা পরিবার রয়েছে, প্রতি পরিবারের আকার ৪.৩৪%।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ-

নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট ২০ টি কলেজ, ২০ টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়(একই সাথে স্কুল ও কলেজ), ভোকেশনাল স্কুল ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৫৮, কিন্ডার গার্টেন ৭৬ ও মাদ্রাসা ৫৬ রয়েছে।

২০১১ সালের তথ্য অনুযায়ী জেলার শিক্ষার হার ৫৭.১০%, নারী স্বাক্ষরতার হার ৫৯.৪৮% এবং পুরুষ স্বাক্ষরতার হার ৫৪.৫৬%, যা জাতীয় স্বাক্ষরতার হার ৬৬.৪% এর চেয়ে কম। হামদার্দ বিশ্ববিদ্যালয় সোনারগাও উপজেলায় অবস্থিত, দেশের সর্বপ্রথম স্থাপিত মেরিন ও শিপবিল্ডিং ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট এখানে রয়েছে। এছাড়া সরকারি তোলারাম কলেজ ও নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

 

সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহের সমাধি – নারায়ণগঞ্জ জেলা

 

নারায়ণগঞ্জ জেলার ব্যবসা:-

শিল্প প্রতিষ্ঠান

নারায়ণগঞ্জ যথাক্রমে সতের এবং  আঠার শতাব্দীর প্রথম দিকে পর্তুগীজ এবং ইংরেজী ব্যবসায়ীদের আগমনের পর গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জকে পাট শিল্পের কেন্দ্রে রুপান্তরিত করা হয়। ১৯৫১ সালের ১২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যানদীর পূর্ব তীরে বিশ্বের বৃহত্তম পাটকল আদমজী প্রতিষ্ঠা হয়।সোনারগাঁ খুব সুক্ষ সুতার তৈরী মসলিন শিল্পের জন্য পরিচিতি লাভ  করে।

১৯২৭ সালে শীতলক্ষ্যা তীরে বাবু সূর্য কুমার বোস দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জের ঢাকেশ্বরী কটন মিল যা ঢাকা পুরো ব্রিটিশজেলার প্রথম টেক্সটাইল মিল ছিল। এছাড়া ১৯২৯ সালে চিত্তরঞ্জন কটন মিল, ১৯৩২ সালে Luxmi নারায়ণগঞ্জ কটন মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশের প্রধান হোসিয়ারি উৎপাদন কেন্দ্র। ১৯২১ সালে বাবু সতীশ চন্দ্র পাল নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে প্রথম হোসিয়ারী কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন।

নারায়ণগঞ্জের বসুন্ধরা এবং মেঘনা গ্রুপের বিভিন্ন শিল্প কারখানা যেমন সিমেন্ট, চিনি, বোতলজাত পানি সহ অন্যান্য পন্যের শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জের পাগলা, আলিকদম, ফতুল্লা, আড়াইহাজার, রুপগঞ্জে অনেক ইটখোলা আছে।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো মতে নারায়ণগঞ্জে মোট শিল্প ইউনিট সংখ্যা ২৪০৯ টি। এগুলো হল খাদ্য, পানীয় এবং তামাক ৩৭৭টি, পাট ,তুলা, বস্ত্র ও চামড়া ১৩২০ টি, কাঠ পন্য ৪৯টি, সজ্জা এবং কাগজ পন্য ৩০টি,  রাসয়নিক পন্য ১০৪টি, অ-ধাতব পন্য ১৭০টি, মৌলিক ধাতু পন্য ১০১টি, গড়া ধাতু , যনত্রপাতি ও সরঞ্জাম ২৩০টি এবং অন্যান্য উৎপাদন -২৮টি ।

জামদানি শাড়ী

অতীত বাংলার মসলিনের গৌরবদীপ্তের আংশিক রেশ নিয়ে আজো অনন্য। প্রাচীনকাল থেকে আমাদের এ শিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে। রঙ-বেরঙের সুতা আর প্রধানত প্রকৃতিনির্ভর গ্রামীন নকশায় কারুশিল্পীদের সুনিপূন হাতে নান্দনিক রুপ ও বৈচিত্রের এক অনবদ্য সৃষ্টি জামদানি। অতি সাধারন উপাদানে আমাদের কারুশিল্পীদের মনের মাধুরী মেশানো রঙের বহুবিধ ব্যবহার ও কারুকাজের সমন্বয় ঘটছে জামদানী তৈরিতে।

কালের আবর্তে আমাদের অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও ঐতিহ্যবাহী মসলিনের উত্তরাধিকার জামদানি শিল্প স্বকীয়তার মাঝে আজো বিকশিত হচ্ছে। এখন দেশের বাজারে জামদানি পন্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারে জামদানি পন্যের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধির পাশাপাশি বিশ্ববাজারও প্রসারিত হচ্ছে। একান্তভাবে দেশীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের ব্যবহারে শিল্পীদের মৌলিক শিল্পবোধ ও ধ্যান ধারনায় সৃষ্টি জামদানি।

আজ পর্যন্ত পৃথিবীর আর কোন দেশের কারিগরদের পক্ষে জামদানি তৈরি সম্ভব হয়নি। এ পন্যের আলাদা বৈশিষ্ট হচ্ছে, এর শিল্পীরা সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই। আদিকাল থেকেই রাজধানী ঢাকা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম, সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার কিছু এলাকায় জামদানি কারুশিল্পীদের বংশানুক্রমিক বসবাস। জামদানি শিল্পীদের অন্যত্র নিয়ে গিয়ে এটি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে।

কিন্তু এ প্রচেষ্টা সফল হয়নি। কারন এ শিল্প বংশানুক্রমিক পারিবারিক পরিমন্ডলে সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে শিল্পভহবন তৈরি করেছে, তা বিশ্বের আর কোথাও নেই। তাছাড়া শীতলক্ষ্যা নদীর পানি থেকে ভস্মিত বাষ্প জামদানি সুতা প্রস্ত্তুত ও কাপড় বুননের জন্য অনুকূল। প্রয়োজন ও সময়ের বাস্তবতায় এ শিল্পের বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে জামদানি তাঁতিদের স্বর্নযুগের পুনঃনির্মানের উদ্যোগ গ্রহনের সচেতনতার দায়িত্ব আমাদের সবার।

 

গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত Freshএর প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশে বেসরকারি উদ্যেগে প্রতিষ্ঠিত শিল্প কারখানাগুলোর মধ্যে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজ অন্যতম একটি বৃহত্তর শিল্প প্রতিষ্ঠান। শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতি এবং ভোক্তাদের মৌলিক চাহিদা পূরনের লক্ষ্যেনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় মেঘনা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজ।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজ এর পথচলা শুরু হয়েছে ১৯৭৬ সালে কামাল ট্রেডিং কোম্পানির  মধ্যে দিয়ে। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালে মেঘনা ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাষ্ট্রিজ নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাটে একটি ক্ষুদ্র পরিসরে তার যাত্রা শুরু করে। আজ যে চারাগাছটি বৃদ্ধি পেয়ে  বৃক্ষ রুপান্তরিত হয়ে মেঘনাঘাটে প্রায় ৩৫০ একর জমিতে তার ডালপালা ছড়িয়ে পরিনত হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাটে ৩২টি কোম্পানি, ৩০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে গড়ে উঠেছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্টিজ। এদের বার্ষিক লেনদেন হয় প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং তাদের নিজস্ব সম্পদ প্রায় এক (১) বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ১৫০০০ কর্মকর্তা ও কর্মাচারী ৩০০০ বিতরনকারী এবং ১০০০ সরবরাহকারী নির্ভরশীল। তাদের উৎপাদিত পন্যগুলোর ব্রান্ড নাম হলো Fresh no.1এবং  pure.

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজের fresh brand মূলত ভোগ্য পন্য উৎপাদন করে।ফ্রেশ ব্রান্ড হলো সজীবতা, বিশুদ্ধতা,যোগ্যতা ও বিশ্বাসের প্রতিক।ফ্রেশ তার ক্রেতাদের সামর্থ্যের মধ্যে উন্নতমানের পন্য সরবরাহে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফ্রেশ ব্রান্ড এর প্রতিষ্ঠানগুলো নিমণরুপ-

1.   তানভীর ফুডস লিঃ

(উৎপাদিত পন্য-গুড়ো দুধ, গুড়ো মসলা)

২. ইউনাইটেড সুগার মিলস লিঃ

(উৎপাদিত পন্য- চিনি)

৩. ইউনিক সিমেন্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ

(উৎপাদিত পন্য- সিমেন্ট)

৪. জনতা ফাওয়ার এন্ড ডাল মিলস লিঃ

(উৎপাদিত পন্য-আটা, ময়দা, সুজি, ডাল)

৫. তানভীর অয়েলস লিঃ

(উৎপাদিত পন্য- পরিশোধিত সয়াবিন/ পাম অয়েল ও ডালডা )

৬. ইউনাইটেড মিনারেল ওয়াটার এন্ড পিইটি ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ

(উৎপাদিত পন্য- পিইটি বোতল ও মিনারেল ওয়াটার)

৭. ইউনাইটেড ফিডস লিঃ

(উৎপাদিত পন্য-পোল্ট্রি ও ফিস ফুড)

৮.মেঘনা টী কোম্পানি

(উৎপাদিত পন্য- চা )

৯.সোনারগাঁ সল্ট ইন্ডাঃ লিঃ

( উৎপাদিত পন্য-লবন)

১০. সুরমা মাস্টার্ড অয়েল মিলস লিঃ

(উৎপাদিত পন্য- সরিষার তেল )

বাংলাদেশের প্রতি তিনটি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবার এদের পন্য ব্যবহার করে থাকে। তারা বর্তমানে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে, দক্ষিন এশিয়ায়, ইউরোপে, উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকায় তাদের পন্য রপ্তানি করে।

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ড্রাষ্ট্রিজ লক্ষ্য হলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে শিল্পখাতে আমদানী নির্ভরতা হ্রাস করা, ঘাটতি পূরনের মাধ্যমে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্নতা অর্জন করা এবং চিনি, সিমেন্ট সহ কিছু কিছু পন্যকে শতভাগ রপ্তানীমূখী করে গড়ে তোলা।

সুতাশিল্প

নারায়ণগঞ্জ শহরের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবসিহত টানবাজার বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাইকারী তুলাভিত্তিক  সুতার বাজার। এখানকার বর্তমান  ক্ষয়িঞ্চু .সুতা ব্যবসায়ীরা এখনও তাদের পূর্ব পূরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখারচেষ্টা করছেন। বৃটিশ শাসন ব্যবস্থার শেষার্ধে নারায়ণগঞ্জে উৎপাদিত সুতা ও কাপড়ের খ্যাতি সারা বিশ্বে এমন একটি স্তরে পৌছায় যে, তৎকালীন সময়ে নারায়ণগঞ্জকে .ম্যানচেষ্টার অফ এশিয়া বলা হতো। রাজা সুকুমার বোস ১৯২৭ সালে প্রথম কটন মিল (লক্ষী নারায়ন কটন মিল) প্রতিষ্ঠা করে এবং পরবর্তীতে তার অনুসরনে বাবু রমেশ চন্দ্র রায় ১৯৪২ সালে চিত্তরঞ্জন কটন মিল প্রতিষ্ঠা করে যা বর্তমানে শুধু একটি গৌরাবান্বিত অতীত ইতিহাস।

নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে সুতার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় স্পিনিং মিলের এজেন্ট। তারা সাধারনত স্পিনিং মিলের সাথে বার্ষিক, দ্বিবার্ষিক বা ত্রিবার্ষিক চুক্তি করে থাকে। চুক্তি মোতাবেক স্পিনিং মিলের উৎপাদিত পন্য সুতা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত সুতার ব্যবসায়ীদের কাছে টানবাজারের মাধ্যমে যায় এবং তারা গুদামজাত করে। সুতা ব্যবসায়ীরা তাদের উক্ত গুদাম থেকে সাধারনত খুচরা বিক্রেতা বা টেক্সটাইল মিলের নিকট সুতা বিক্রয় করে থাকে।

বাংলাদেশের তাঁত শিল্পে বিশেষ করে নরসিংদীর বাবুর হাট, সিরাজগঞ্জের সোহাগপুর, এনায়েতপুর এবং শাহজাদপুর, কুষ্টিয়ার বসুরখালী ও টাঙ্গাইলের তাঁতীদের সুতার উৎস নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের সুতার বাজার। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সুতার বাজার নারায়ণগঞ্জের টানবাজারের সুতা খাতে বর্তমানে নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সুতার কাঁচা মালের দাম বৃদ্ধি ও ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি দ্রুত সুতা খাতকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে।

তাছাড়া বৈষম্যমূলক শুল্ক ও মুদ্রা নীতি, কাঁচামালের অপ্রতুলতা, মূলধন বা পুঁজির অভাব, উপযুক্ত প্রযুক্তির অভাব, ব্যাংক গুলোর চড়া সুদের হার, অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ, পরিবহন সমস্যা, সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, অতিরিক্ত করারোপ, স্পিনিং মিলগুলোর চুক্তি ভঙ্গের প্রথা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নীরবতা সুতার শিল্পের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করছে। আরও সমস্য হলো ৩০ কাউন্টের নিচে এবং ৮০ কাউন্টের উপরের সুতা আমদানী ব্যবসা  বান্ধব নয় এবং রপ্তানীমূখী পোষাক শিল্পের মালিকরা বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত যে সুতা আমদানী করে তা স্বল্প দামে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে যা সুতা খাতে অশনিসংকেত বলে প্রতীয়মান হয়।

অপরিসীম সম্ভাবনাময় এ খাতকে উজ্জীবিত করতে হলে সরকারকে অবশ্যই তুলা চাষীদের ভর্তুকি দিতে হবে, উন্নতমানের তুলা বীজ সরবরাহ করতে হবে, অনাবাদী জমিতে তুলা চাষ করতে হবে অর্থাৎ সুতার কাঁচা মালের সহজলভ্যতা সৃষ্টি করতে হবে এবং ব্যবসা বান্ধব শুল্ক ও মুদ্রানীতি প্রণয়ন, রপ্তানীমুখী পোষাক শিল্পের মালিকদের সুতা আমদানীতে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে, ব্যাংক ঋণের সুদের হার কমাতে হবে, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বিশ্চিত করতে হবে এবং ইনসেনটিভ প্যাকেজের ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশের সুতা ব্যবসায়ীদের দ্বারা গঠিত সমিতি হলো বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্টস এসোসিয়েশন। সারা দেশে দু’টি ক্যাটাগরীতে (এসোসিয়েশন গ্রুপ ও জেনারেল গ্রুপ) তাদের প্রায় ১,৫০০ সদস্য রয়েছে। এর প্রধান কার্যালয় নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানটি এফবিসিসিআই এর তালিকাভুক্ত সদস্য বাংলাদেশ ইর্য়ান মার্চেন্টস এসোসিয়েশন সুতা ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্লাটফরম যেখানে সুতা ব্যবসায়ীরা তাদের অধিকার রক্ষা, সুবিধা সংরক্ষণ ও অসুবিধা দূরীকরণে চেষ্টাকরে থাকে।

অবকাঠামো, সহায়ক বানিজ্য ও বিনিয়োগ নীতি এবং তুলনামূলক সুবিধাজনক শ্রম নির্ভর শিল্পের উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশ আজ বিনিয়োগের জন্য চমৎকার সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগ সরকারের গৃহীত অর্থনৈতিক সংস্কারের ফলে স্থানীয় ও বিদেশী  বিনিয়োগকারীরা এককভাবে বা যৌথভাবে সুতা শিল্পখাতে বিনিয়োগ করবে এবংদেশীয় সুতা শিল্প পুনরায় তার স্বর্নযুগে ফিরে যাবে এই প্রত্যাশা সকলের।

 শিল্প প্রতিষ্ঠানের  তথ্য:

ক্রঃনং

প্রতিষ্ঠানের ধরণ

সংখ্যা

০১.

গার্মেন্টস

৩৬০ টি

০২.

টেক্সটাইল

১৭৫ টি

০৩.

জুট মিলস

১৬ টি

০৪.

লবন মিলস

৭০ টি

০৫.

নিটিং ফ্যাক্টরি

১৮৯৫ টি

০৬.

পেপার এন্ড প্যাকেজিং

৪০ টি

০৭.

লৌহ ও লৌহজাত দ্রব্য

৪৮ টি

০৮.

কেমিক্যালস

১৭ টি

০৯.

ডাইং

১৮৮ টি

১০.

সিমেন্ট ফ্যাক্টরি

৮ টি

১১.

মেলামাইন ফ্যাক্টরি

৩ টি

১২.

চুন ফ্যাক্টরি

৩৫ টি

১৩.

রি-রোলিং মিলস

৭৫ টি

১৪.

ক্যাবলস ফ্যাক্টরি

২ টি

১৫.

হোসিয়ারী

২০৭৫ টি

১৬.

জামদানী পল্লী (রূপগঞ্জ)

১ টি (তাঁতের সংখ্যা ৪০ টি)

১৭.

সাবান ফ্যাক্টরি

৫টি

১৮.

ফ্যান ফ্যাক্টরি

৩ টি

১৯.

লাইট ফ্যাক্টরি

১ টি

২০.

বিবিধ

৮৭০ ট

ক)     জুট মিল সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. নওয়াব আঃ মালেক জুট মিলস  : কাঁচপুর, নারায়ণগঞ্জ।

২. নিউ ঢাকা জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ            : টাটকী, তারাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৩. উত্তরা জুট এন্ড ফাইবার মিলস লিঃ            : কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৪. মাসরিকী জুট মিলস লিঃ   : বিরাব, কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৫. নবাব আশকারী জুট মিলস লিঃ : কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৬. গাউছিয়া জুট মিলস লিঃ             : মুড়াপাড়া, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৭. সারওয়ার জুট মিলস লিঃ            : সোনাকান্দা, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।

৮. নবারম্নন জুট মিলস লিঃ            : কাঞ্চন, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

 

পানাম নগর – নারায়ণগঞ্জ জেলা

 

খ)  চুন ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :
১. খাজা লাইমস  : আটি (ওয়াপদা রোড), সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

২. রহমান লাইমস    : আটি (ওয়াপদা রোড), সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৩. হারম্নন লাইমস    : আটি (ওয়াপদা রোড), সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৪. বাদশা মিয়া লাইমস : আটি (ওয়াপদা রোড), সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৫. মেঘনা লাইমস    : আটি (ওয়াপদা রোড), সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৬. আশরাফ আলী লাইমস  : আটি (ওয়াপদা রোড), সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৭. মদিনা আলী লাইমস : নয়াআটি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৮. ফয়সাল লাইমস   : নয়াআটি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৯. রানী আলী লাইমস : নয়াআটি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১০. সুরমা লাইমস    : নয়াআটি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১১. আরাফাত লাইমস : নয়াআটি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১২. জাজিরা লাইমস : পাইনাদী, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১৩. ঢাকা লাইমস    : পাইনাদী, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১৪. যমুনা লাইমস    : পাইনাদী, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১৫. ভাই ভাই লাইমস : মিজমিজি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১৬. শরীফ লাইমস   : মিজমিজি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

১৭. ঈশামতি লাইমস : নবীগঞ্জ, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।

১৮. আবুল লাইমস   : লামাপাড়া, ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ।

১৯. তালুকদার লাইমস : তারাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

গ)  সিমেন্ট ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. আকিজ সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                           : নবীগঞ্জ (পৌরসভা রোড), বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।

২. সিমেক্স সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                           : মাহমুদনগর, মদনগঞ্জ, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।

৩. বাংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                           : মাহমুদনগর, মদনগঞ্জ, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।

৪. সাতঘোড়া সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                        : তারাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

৫. ফ্রেশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                              : মেঘনাঘাট, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ।

৬. স্ক্যান সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                             : কাঁচপুর, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ।

৭. মীর সিমেন্ট ফ্যাক্টরি                               : গঙ্গানগর, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

ঘ) ক্যাবলস ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. প্যারাডাইজ ক্যাবলস : কুতুবআইল, হাজীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

২. বাংলাদেশ ক্যাবলস : মদনপুর, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ।

ঙ)  মেলামাইন ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. বাংলাদেশ মেলামাইন  : বরাব, ভুলতা, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ।

২. শরীফ মেলামাইন : বরাব, ভুলতা, রূপগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৩. ইউনিক মেলামাইন : ভুলতা, রূপগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

 

সোনাকান্দা স্টেডিয়াম – নারায়ণগঞ্জ জেলা

 

চ)  ফ্যান ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. নাভানা ফ্যান  : রূপগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

২. সিটি ফ্যান : নিতাইগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৩. হীরা ফ্যান : নিতাইগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

ছ) সাবান ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. পূবালী সোপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ : নিতাইগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

২. আলম সোপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ (১ নং পচাঁ সাবান)  : সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৩. জামাল সোপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ : নবীগঞ্জ, বন্দর, নারায়ণ-গঞ্জ।

ঝ)  লাইট ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. সুপার স্টার কোং লিঃ : দেলপাড়া, ভূইগড়, নারায়ণ-গঞ্জ।

ঞ)  ক্যামিকেলস্  ফ্যাক্টরী সমূহের নাম ও ঠিকানা :

১. ট্রিম কেমিকেলস্  : মিজমিজি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

২. নাসির কেমিকেলস্ : মিজমিজি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৩. বি এস কে কেমিকেল্স  : খাসপাড়া, সোনারগাঁ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৪. প্যারামাউন্ট কেমিকেলস্    : মিজমিজি, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৫. বেঙ্গল কেমিকেলস কোং   : ৩০৫ নতুন পালপাড়া, নারায়ণ-গঞ্জ।

৬. এইচ পি কেমিকেলস্ লিঃ  : তিনগাঁও, আড়াইহাজার, নারায়ণ-গঞ্জ।

৭. রায়পুরা সুমাইয়া কেমিকেলস্ লিঃ    : তারাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

৮. মেরিন কেমিকেলস্ কোং লিঃ   : নন্দলালপুর, পাগলা, ফতুল্লা, নারায়ণ-গঞ্জ।

৯. ওয়াটা কেমিকেলস্ লিঃ    : মঙ্গলখালী, মুড়াপাড়া, রূপগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

১০. হোসেন কেমিকেলস্ লিঃ  : এনায়েতনগর, পঞ্চবটী, ফতুল্লা, নারায়ণ-গঞ্জ।

১১. রহমান কেমিকেলস্ লিঃ  : তারাব, রূপগঞ্জ, নারায়ণ-গঞ্জ।

১২. কে এন এন কেমিকেলস্ লিঃ   : বিসিক শিল্পনগরী, কাঁচপুর, সোনারগাঁ,

Exit mobile version